ঢাকার কোনো ব্যস্ত রাস্তায় পনের মিনিট হাঁটলে ইচ্ছা না থাকলেও একটা বিড়ি খাওয়া হয়ে যায়৷ ডানে বামে সামনে পেছনে মানুষ হাঁটছে অার বিড়িতে টান দিয়ে ভোস ভোস করে ধোঁয়া ছাড়ছে৷ ইচ্ছে না থাকলেও সেই ধোঁয়া অাপনার নাক দিয়ে ফুসফুসে যাবেই৷
কী 'মধু' আছে সিগারেটে! 'ধূমপানে বিষপান' এটা আমরা সবাই জানি। সিগারেটের প্যাকেটেও লেখা থাকছে 'ধূমপান ফুসফুস ক্যান্সারের কারণ', 'ধূমপানে স্ট্রোক হয়', 'ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর', ধুমপান মৃত্যু ঘটায় ইত্যাদি। তবুও তৃতীয় বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে ধূমপায়ীদের সংখ্যা। রূপকথায় রয়েছে দেবতাদের আর্শীবাদে জন্ম হয়েছে তামাক গাছের। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এই গাছটির কোনো ভেষজগুণ আজো আবিষ্কৃত হয়নি। গবেষণায় এর মধ্যে ক্ষতি ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় নি। আচ্ছা কোনো আপেলের পেকেটে যদি লেখা থাকে 'এতে পর্যাপ্ত ফরমালিন দেয়া আছে তাহলে কি আমরা কেউ সেটা কিনব?
সিগারেটে থাকে চার হাজারেরও বেশি ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ। আর্সেনিক ছাড়াও এতে এমন রাসায়নিক পদার্থ আছে যা পাওয়া যায় গ্যাসোলিনে। আরো আছে ব্যারিলিয়াম নামের বিষাক্ত ধাতব কণা। আছে বিষাক্ত ক্যাডমিয়াম, যা ব্যবহার করা হয় ব্যাটারিতে। সিগারেটে রয়েছে নিকেলের অস্তিত্ব। কাঠে বার্ণিশ করতে যেসব উপাদানের প্রয়োজন হয় তারও একটি উপাদান থাকে সিগারেটে। সিগারেটে এমন রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে যা ব্যবহার করা হয় ইঁদুর মারার বিষ তৈরিতে। তাই ধূমপানে একজন মানুষের উপকারি দিক তো নেই-ই রয়েছে অন্তহীন ক্ষতিকারক নানা দিক। পা থেকে মাথা পর্যন্ত এমন কোনো অংশ নেই যেখানে ধূমপানের ক্ষতি নেই। ধূমপান মহাধমনী থেকে শুরু করে সূক্ষ্ম রক্তনালী পর্যন্ত সব জায়গায় তার বিষাক্ত থাবা বসায়। তারপরও জেনে শুনে মানুষ এটা কেন খায়?
আমি তো এই জিনিসের গন্ধও সহ্য করতে পারি না। বমি আসে। মানুষ স্বাস্থের জন্য কত কিছু করে। আবার সেই লোককেই দেখি সিগারেট খাচ্ছে নিশ্চিন্ত মনে। ফরমালিন কিংবা অন্য সব ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে বাঁচার জন্য বাজারে গিয়ে আমরা ভয়ানক সতর্কতা অলম্বন করি। আর সেই সাথে অবলিলায় ফুঁকতে থাকি সিগারেট। কী স্ববিরোধিতা!